ঢাকা , শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫ , ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স, ইসরায়েলের তীব্র ক্ষোভ ভারতে স্কুল ভবন ধসে প্রাণ গেল ৭ শিশুর ইরানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধের প্রস্তুতি ইসরায়েলের ভারতের কোচ হওয়ার স্বপ্ন ভাঙল জাভির সান্তোস ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন নেইমার! বার্নাব্যু ছাড়তে নারাজ এনদ্রিক আট বছর পর টেস্টে ৫ উইকেট শিকার স্টোকসের আট বছর পর টেস্টে ৫ উইকেট শিকার স্টোকসের পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন শাহিন আফ্রিদি শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ার পরেও উইকেটের উপর ক্ষোভ সালমানের সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্সে খুশি লিটন বিশ্বকাপই লিটনের মূল লক্ষ্য খায়রুল হকের হঠকারী রায়ে গুম, খুনের লাইসেন্স পেয়েছিল রাজনৈতিক মাফিয়ারা খায়রুল হককে গ্রেফতারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানালেন ফখরুল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার অন্তর্বর্তী সরকারের শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সন্দেহ রয়েছে-নুর দুই শর্তে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা যাবে-আসিফ নজরুল সারা বছর মৃত ভোটার বাদ দেওয়ার ক্ষমতা চান ইসি কর্মকর্তারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ মাইলস্টোনে হেল্প ডেস্ক স্থাপন, নিখোঁজদের তথ্য সংগ্রহ চলছে
ঢাকায় বাড়ছে অপরাধ

দক্ষ জনবল না থাকায় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ডিবি

  • আপলোড সময় : ২৪-০৭-২০২৫ ১০:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০৭-২০২৫ ১০:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
দক্ষ জনবল না থাকায় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ডিবি
রাজধানীতে অপরাধ বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে দক্ষ জনবলের তীব্র সঙ্কটে ভুগছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ডিবি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডিবি অনেকটা টেনেটুনে চলছে। রাজধানীতে ডিবির ১০টি বিভাগের ৬টিই জোড়াতালি দিয়ে চলছে। দু’মাস ধরে ডিএমপির ডিবি প্রধানের পদটি ফাঁকা। বর্তমানে অতিরিক্ত রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন একজন যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার। তাছাড়া ফাঁকা পড়ে আছে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি), অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ও সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এসি) অনেক পদ। তাছাড়া বর্তমানে দায়িত্বে থাকাদের একটি বড় অংশই দক্ষ নন তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে। ফলে আসামি শনাক্ত ও অপরাধীদের অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশের এই শাখাটিকে বেগ পেতে হচ্ছে। পুলিশ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাঝে মধ্যেই রাজধানীতে সংঘটিত হওয়া বড় বড় অপরাধের আগাম তথ্য ডিবি পাচ্ছে না। ফলে প্রকাশ্যে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি ও মাদক ব্যবসায়ীদের তৎপরতা ব্যাপক আকারে বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীরা আতঙ্কে আছে। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর ডিবি অপরাধী গ্রেফতারে সফলতা পেলেও প্রিভেন্টিভ পুলিশিংয়ে যেতে পারছে না। অর্থাৎ অপরাধ সংঘটনের আগে তা প্রতিরোধ করতে ডিবির নেয়া কার্যক্রম পর্যাপ্ত নয়। মূলত জনবল সংকট এবং রাজনৈকি পটপরিবর্তনের পর ডিবিতে দায়িত্ব পাওয়া অধিকাংশ কর্মকর্তাই নবিশ। তাদের গোয়েন্দা শাখায় কাজের অতীত অভিজ্ঞতা নেই। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ১০টি বিভাগ রয়েছে। রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয় হলেও প্রতিটি বিভাগের সদস্যরা মাঠপর্যায়ে নিজ নিজ এলাকার অপরাধমূলক কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে প্রিভেন্টিভ পুলিশিং ও অপরাধী গ্রেফতার করা ডিবির প্রধান কাজ। ডিবির প্রতিটি বিভাগে আলাদা টিম রয়েছে। ইন্সপেক্টর, এসআই ও কনস্টেবলদের সমন্বয়ে একেকটি টিম গঠিত হয়। আর এসব টিমের ইনচার্জ থাকে এডিসি ও এসি পদমর্যাদার কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, রাজধানীতে মিরপুর বিভাগ অপরাধপ্রবণ এলাকার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ডিবির মিরপুর বিভাগে সহকারী কমিশনারের (এসি) দুটি পদই শূন্য। অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের (এডিসি) তিনটি পদ থাকলেও আছেন দুজন কর্মকর্তা। এভাবেই মাসের পর মাস চলছে। তাছাড়া তেজগাঁও বিভাগ হচ্ছে ডিএমপির সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ একটি এলাকা। এ বিভাগের অধীনে রয়েছে মোহাম্মদপুর, হাতিরঝিল, আদাবর, শেরেবাংলা নগর, তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা। কিন্তু ডিবির এ বিভাগের কোনো নিয়মিত ডিসি নেই। এছাড়া এডিসির তিনটি পদ থাকলেও মাত্র একজন কর্মকর্তা আছেন। তাছাড়া ডিবি রমনা বিভাগেও নিয়মিত ডিসি নেই এবং ফাঁকা এডিসির তিনটি পদই। তাছাড়া ডিবিতে কোনো নারী ক্যাডার কর্মকর্তা নেই। ফলে অনেক নারী ভিকটিম, বিশেষ করে সাইবার ক্রাইমের শিকার নারী সুরাহা পেতে ডিবিতে এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। গুরুত্বপূর্ণ কোনো নারী আসামি গ্রেফতার করলে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স থেকে নারী কর্মকর্তা আন করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ডিবি থেকে নগরবাসী পূর্ণাঙ্গ সেবা পাচ্ছে না। সূত্র আরো জানায়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সঙ্গে ডিবির কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থাকে। কিন্তু সেখানে ধারণকৃত কলরেকর্ড শোনার মতো জনবলও নেই। তাছাড়া এনটিএমসির তথ্য পেতে ডিবিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে। ডিবিতে এই মুহূর্তে এনটিএমসির সঙ্গে কাজ করার মতো দক্ষ জনবলও নেই। ডিবিতে থাকা কিছু কর্মকর্তা আগে থেকে নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিসের কাজে অভিজ্ঞ হলেও বেশির ভাগই একেবারেই অনভিজ্ঞ। গত ১০ মাসে একজন কর্মকর্তাও প্রযুক্তি সম্পর্কিত দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো প্রশিক্ষণ পাননি। ফলে এলআইসি (ল-ফুল ইন্টারসেপশন বা ফোনে আড়িপাতা) সম্পর্কিত কার্যক্রমে অভ্যন্ত আছে বা ভালো কাজ জানে এমন কর্মকর্তা যুক্ত না হলে ডিবির কাজের গতি দ্রুত হারাবে। একই সঙ্গে ডিবি কর্মকর্তাদের কাজের দক্ষতা বাড়াতে পর্যাপ্ত ইন-হাউজ ও অ্যাডভান্স প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত ফান্ড ও হাই টেকনোলজি রিলেটেড ইকুইপমেন্ট জরুরি। এদিকে এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, ডিবির যে পদগুলো খালি আছে অচিরেই সেগুলো পূরণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ জানান, সারা দেশেই কমে গেছে এএসপির সংখ্যা। পিএসসির নিয়োগও আটকে গেছে। ফলে সারা দেশেই সংকট দেখা দিয়েছে। পুলিশে নারীর সংখ্যাও কম। আনুপাতিক হারে নেই। এরপরও নারী অফিসার দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতোদিন ডিবি মানেই একটা আতঙ্ক ছিল। সেখান থেকে বের হয়ে ডিবি যে জনগণের আস্থার জায়গায় আসে সেজন্য পুরাতন জনবল, যাদের দেখলেই মানুষ অবিশ্বাস করতো তাদের বের করে দেয়া হয়েছে। নতুন কিছু লোক আনা হয়েছে। তারা অনেক ক্ষেত্রে অবহেলিত ছিল এবং পুলিশের কাজকর্ম ও প্রশিক্ষণ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। তাদের পর্যাপ্ত দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স